আরিফ চেয়ারে বসে আছে, চোখের সামনে সেই রহস্যময় ঘড়ি। কয়েক মিনিট আগেই সে দেখল ঘড়ির কাঁচের নিচে অদ্ভুত এক বার্তা ফুটে উঠেছে—“সময় কখনো থেমে থাকে না, কিন্তু তোমার জন্য সে অপেক্ষা করছে। তুমি কি প্রস্তুত?”
তার মাথার মধ্যে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সত্যিই কি সময় তার জন্য অপেক্ষা করছে? নাকি সে কোনো অলীক কল্পনার মধ্যে আটকে গেছে?
সময় ও বাস্তবতার দ্বন্দ্ব
বইগুলোর দিকে আবার দৃষ্টি দিল আরিফ। একটার পর একটা পাতা ওল্টাতে থাকল। হঠাৎই তার চোখ পড়ল একটা অধ্যায়ে, যার শিরোনাম “সময় কি বাস্তব?”।
এই অধ্যায়ে বলা হয়েছে—
“সময় এমন এক ধারণা, যা কেবলমাত্র মানুষের বোধগম্যতার জন্য তৈরি। প্রকৃতপক্ষে, সময়ের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক আছে। বিজ্ঞান বলে, সময় হলো আপেক্ষিক। তোমার অবস্থান, গতি, এমনকি মনের ভাবনা পর্যন্ত সময়কে প্রভাবিত করতে পারে।”
এই লেখা পড়ে আরিফ কিছুটা বিভ্রান্ত হলো। সময় কি সত্যিই কেবল একটি ধারণা? তাহলে সে এখন যে অবস্থায় আছে, তা কি বাস্তব?
একটি উদাহরণ: দুই যাত্রীর সময় ভ্রমণ
বইয়ের আরেকটি অংশে একটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে—
“ধরা যাক, দুই বন্ধু রিয়াদ ও হাসান একই দিনে পৃথিবী থেকে দুটি আলাদা যাত্রা শুরু করল।
- রিয়াদ রকেটে করে আলোর গতির ৯০% বেগে মহাকাশে চলে গেল,
- আর হাসান পৃথিবীতেই রয়ে গেল।
পাঁচ বছর পর রিয়াদ যখন ফিরে এলো, সে দেখল পৃথিবীতে ৫০ বছর কেটে গেছে! অথচ তার নিজের কাছে মনে হলো মাত্র ৫ বছর কেটেছে।”
আরিফ এই ঘটনা দেখে অবাক হলো। তাহলে কি সময় একেকজনের জন্য একেকভাবে কাজ করে? বইয়ের ব্যাখ্যা বলছে, এটা আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনুযায়ী সত্য।
এই ব্যাখ্যা যদি সত্যি হয়, তাহলে তার বর্তমান অবস্থা কী?
সময় কি সত্যিই স্থির?
আরিফ আবার নিজের অবস্থার দিকে ফিরে এলো। ঘড়ির কাঁটা যখন ২৩:৫৯-এ আটকে গিয়েছিল, তখনই ঘরের পরিবেশ বদলে গিয়েছিল। হয়তো এটি কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সে চিন্তা করতে লাগল, “যদি সময় একটি ধ্রুবক না হয়, তাহলে কি আমি এখানে আটকে আছি, নাকি আমি এক ভিন্ন বাস্তবতার মধ্যে চলে এসেছি?”
সে ঘড়ির দিকে আবার তাকাল। হঠাৎই কাঁটা এক ধাক্কায় ১২:০১-এ লাফিয়ে গেল। আশ্চর্যজনকভাবে, তার চারপাশের পরিবেশও পাল্টে যেতে লাগল!
ঘরের দেয়াল যেন একটু একটু করে ফিকে হয়ে যাচ্ছে, বাতাস ভারী হয়ে উঠছে, আর অদৃশ্য এক শব্দ ধীরে ধীরে তার কানে প্রবেশ করছে—টিক…টিক…টিক…
পরবর্তী অধ্যায়ে: সময়ের নতুন মাত্রা
এই অধ্যায়ে সময়ের আপেক্ষিকতা ও বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে আরিফ ধীরে ধীরে সময়ের অদ্ভুত পরিবর্তন অনুভব করছে।
পরবর্তী অধ্যায়ে জানা যাবে, সে কোন বাস্তবতায় প্রবেশ করছে!








