Image

প্রথম ইন্টার্নশিপের গল্প

AIUB তে শেষ সেমিস্টারে শুধুমাত্র ইন্টার্নশীপ ছিল। এখন সবকিছু মনে নেই, তবে এটুকু মনে আছে যে ইন্টার্নশীপ নিয়ে আমি খুব একটা সিরিয়াস ছিলাম না। বলতে গেলে, ইন্টার্নশীপ কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় তার কোনো ধারণাই ছিল না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশীপ না পেলে ল্যাবে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে হয়, সপ্তাহে হয়তো দুই দিন। তাই বাইরে ইন্টার্নশীপ ব্যবস্থা করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে হয়।

আমার হাতে সময় কম ছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আমাকে বলল আমাদের এক স্যারের কোম্পানি আছে, স্যারের সাথে কথা বলতে। আমি এবং এক বন্ধু তখনই স্যারের কাছে গেলাম। স্যার তার অফিসের কার্ড দিয়ে তার অফিসে পরদিন যেতে বললেন। আমরা স্যারের কথা মত তার অফিসে গেলাম। অফিসটা ছিল মহাখালি ডিওএইচএস-এ। সংগত কারণেই কোম্পানির নাম উল্লেখ করছি না, কারণটা আমার ব্লগের বাকি অংশ পড়লে বুঝে যাবেন।

Image Not Found

আমরা দু’জন যাওয়ার পর দেখি অফিস একদম খালি, শুধু একজন আছে অফিসে। যাই হোক, আমাদের তো একটা ব্যবস্থা হলো, সেটাই অনেক। ৫ দিন অফিসে যেতে হবে, অফিস টাইম ৮ ঘণ্টা। প্রথমবার একটানা এতক্ষণ বসে থাকা। এই গল্প লিখতে গেলে হয়তো একটা বই হয়ে যেতে পারে। তাই সংক্ষেপে লিখছি, অফিসে আসলে কোন কাজ নেই। স্যার আইসিটি থেকে সরকারি প্রকল্প নেয়, সেটাই শুধু করে। আপাতত কোন প্রকল্প নেই, আগের একটি প্রকল্পের শুধু ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। আমাদের দিয়ে দিনের অর্ধেক সময় সেই কাজই করানো হত। একমাস করার পর মনে হলো শুধু শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে। দুপুরের খাবারও বাইরে থেকে নিজের টাকায় খেতে হতো।

যে স্যার আমাদের ইন্টার্নশীপের সুপারভাইজার ছিলেন, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বললাম যে এখানে কোন কাজ নেই, শেখার তো দূরের কথা। স্যার বললেন, যেহেতু আপনি কনভোকেশনের জন্য নিবন্ধন করেছেন, ইন্টার্নশীপ চালিয়ে যান। রিপোর্ট জমা নিয়ে সমস্যা হবে না। আরও কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ৩ জন আমাদের কোম্পানিতে যোগ দেয়। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের সবাইকে একটি ফর্মে সাইন করানো হয় যে ফেসবুকে এই কোম্পানি নিয়ে কোন খারাপ কিছু লেখা যাবে না। প্রথম দিকে কোম্পানিতে যে একজন ছিল সে খুব ভাব নিত, কিন্তু পরবর্তীতে তাকে আর কেউ দাম দিতাম না। এর পেছনে অনেক কারণ ছিল।

মাঝে আমরা BUET-এর একটি কোর্সে ভর্তি হই। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন স্যারকে বললাম যে আমরা ৫ দিনের পরিবর্তে ৪ দিন করব, স্যার এমন ভাব করলেন যেন তার অফিসে অনেক কাজ। কেন তার সাথে কথা না বলে ভর্তি হলাম। কিছু অপশন না পেয়ে পরে রাজি হলেন। আমাদের সাথে যারা পরে এসেছিল তারা যেহেতু ১ মাস পরে এসেছিল, তাদেরকে বেশি কাজ করানো হয়েছিল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর তারা কেউ আর যায়নি।

Image Not Found
Image Not Found

এই ইন্টার্নশীপ থেকে একটাই অর্জন ছিল – আইসিটি ভবনে যাওয়া এবং খাওয়া দাওয়া করা। এইভাবেই নাম মাত্র করেছিলাম আমার প্রথম ইন্টার্নশীপ। আর ভার্সিটিতে ইন্টার্নশীপের রিপোর্ট জমা দিয়ে পেয়েছিলাম A+। এই গল্পটা নিয়ে সামনে হয়তো আরেক দিন আরো বিস্তারিত লিখব।

Weekly Popular

1 Comments
  • ভাই , আপনি সুন্দর লেখেন। লেখা চালিয়ে যান। আর একটু পরামর্শ হলো, শুধু লিংক না দিয়ে দু চার লাইন ফেসবুকে দিলে , ব্যাপার টা প্রমোশনাল হবে।